মস্কোয় নিযুক্ত বাংলাদেশি দূতকে রাশিয়ার তলব

বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকা জাহাজ বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার কারণ জানতে মস্কোতে তলব করা হয় তাঁকে। 

আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মস্কোর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছে। তলবের কারণ হিসেবে রুশ জাহাজগুলোকে বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার ঢাকার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। 

একটি বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে জানায়, ঢাকার নেওয়া পদক্ষেপটি ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ছিল না। এটি দুই দেশের সম্ভাবনাময় বিভিন্ন সহযোগিতায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। 

প্রসঙ্গত, ইউক্রেন সংকট শুরুর পর রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞায় থাকা রাশিয়ার একটি জাহাজে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম পাঠায় দেশটি। উরসা মেজর নামের রাশিয়ার পতাকাবাহী একটি জাহাজে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পণ্য নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। 

তবে তার আগেই ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জানায় যে ওই জাহাজটি আসলে ‘উরসা মেজর’ নয়। এটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা–৩ এ’ জাহাজ। যাচাই করে বাংলাদেশ বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে দেয়। গ্লোবাল শিপ ট্র্যাকিং ইন্টেলিজেন্স মেরিন ট্রাফিক ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য বলছে, জাহাজটি এখনো বঙ্গোপসাগরের ভেসে বেড়াচ্ছে। 

তবে গ্লোবাল শিপ ট্র্যাকিং ইন্টেলিজেন্স মেরিন ট্রাফিকের ১৫ জানুয়ারির তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটি তখন বঙ্গোপসাগরে ভারতের অংশে মাঝ সমুদ্রে নোঙর অবস্থান ছিল। রুট পরিবর্তন করে চীনের সায়েনথো বন্দরে গন্তব্য সুনির্দিষ্ট করেছিল। যা গত ৩১ জানুয়ারি চীনের বন্দরটিতে পৌঁছানোর কথা ছিল। 

এদিকে নিষেধাজ্ঞায় থাকা রুশ জাহাজের পণ্য খালাস নিয়ে মার্কিন পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে এক প্রকার সতর্ক করা হয়েছে। অন্যদিকে জাহাজের পণ্য খালাস করতে না দিলে তা দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ঢাকাকে ডিসেম্বরে জানিয়েছিল ঢাকার রুশ দূতাবাস। 

রুশ বার্তা সংস্থা তাস এক প্রতিবেদনে বলেছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় থাকা ৬৯টি জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের কথা ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত নিশ্চিত করেছেন।  

ঢাকায় রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে বলা হয়, এর আগে নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত জাহাজে রাশিয়া থেকে মালামাল পাঠানো হয়েছে, আগামীতেও একইভাবে সরঞ্জাম পাঠাতে হবে।