মৃত মানুষের জন্য খাওয়ানো কি জায়েজ?

মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের জন্য দোয়া করা এবং বিভিন্ন নফল ইবাদত যেমন-দান-সদকা, তাসবিহ-তাহলিল, তেলাওয়াত ইত্যাদি করে তার সওয়াব মৃতকে পৌঁছানো গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল, যা হাদিস শরিফ দ্বারা প্রমাণিত। তবে এটি একটি ব্যক্তিগত আমল। কোনো দিন-তারিখ ও আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই যখন ইচ্ছা তখনই এ আমল করা যায়।

কিন্তু বর্তমানে এই সহজ আমলটিকে আনুষ্ঠানিক রূপ দান করে অনেক ক্ষেত্রেই তাকে সওয়াবের পরিবর্তে গুনাহের কাজে রূপান্তর করা হয়ে থাকে।

যেমন- ১. তিন দিনা, সাত দিনা, একুইশা, চল্লিশা এ সকল নামে এ অনুষ্ঠান যথাক্রমে মৃত্যুর ৩য়, ৭ম, ২১শ ও ৪০তম তারিখে করাকে জরুরি মনে করা হয় বা কমপক্ষে এমন ধারণা রাখা হয় যে, এ তারিখগুলোর বিশেষত্ব রয়েছে। অথচ শরয়ী দলিল-প্রমাণ ছাড়া বিশেষ দিন-তারিখ নির্ধারণ করে নেওয়া বিদআত ও নাজায়েজ।

২. ঈসালে সাওয়াবের প্রচলিত পন্থায় আরেকটি বড় আপত্তিকর দিক হল এতে যিয়াফত তথা আড়ম্বরপূর্ণ দাওয়াত অনুষ্ঠানকেই ঈসালে সওয়াবের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। অথচ শরীয়তে যিয়াফতের আয়োজনের কথা তো আছে আনন্দের সময়, মুসিবতের মুহূর্তে নয়।

হাদিস শরিফে এসেছে-হযরত জারির ইবনে আবদুল্লাহ আলবাজালী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (তরজমা) ‘আমরা (সাহাবাগণ) দাফনের পর মৃতকে কেন্দ্র করে সমবেত হওয়া ও খাবারের আয়োজন করাকে ‘নিয়াহা’ বলে গণ্য করতাম।’ (মুসনাদে আহমদ ২/২০৪; ইবনে মাজাহ ১৬১২)

কোনো দিন-তারিখ নির্ধারিত না করে গরীব-মিসকীনদেরকে খানা খাওয়ানোটাও ঈসালে সাওয়াবের একটি বৈধ পন্থা। কিন্তু এমন যিয়াফতের আয়োজন করা যাতে অনেক ক্ষেত্রে সমাজের নেতৃত্বস্থানীয় ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদেরকে প্রাধান্য দেওয়া হয় এটি আদৌ ঈসালে সাওয়াবের গ্রহণযোগ্য পন্থা নয়।