রমজানকে সামনে রেখে গাজায় সবচেয়ে বড় ত্রাণবাহী জাহাজ পাঠাল তুরস্ক

ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার মানুষের সহায়তায় নিজেদের সবচেয়ে বড় ত্রাণবাহী জাহাজ পাঠিয়েছে তুরস্কের রেড ক্রিসেন্ট। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তারা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, দুই হাজার ৭৩৭ টন সহায়তা পণ্য নিয়ে আমাদের সবচেয়ে বড় জাহাজটি আজ গাজায় যাচ্ছে। খবর আনাদোলু।

তার্কিশ রেড ক্রিসেন্টের প্রেসিডেন্ট ফাতমা মেরিক ইলমাজ এক্সে লেখেন, আমরা এ পর্যন্ত যেসব জাহাজ পাঠিয়েছি, এটি সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়। এই সহায়তাপণ্যের মধ্যে রয়েছে কনটেইনার কিচেন, খাবার, কাপড় ও ওষুধ। আমরা আশা করছি, গাজার সাধারণ মানুষের মানসিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য এসব সহায়তা বড় একটি নিয়ামক হবে।

তিনি আরও বলেন, গাজার ভুক্তভোগী শিশু ও নারীদের দিকে তাকানোর মতো অবস্থা নেই। আমরা সবসময়ই তাদের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সাহায্য তাদের কাছে পৌঁছাবে কি না তা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। এবারে তুরস্কের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সহায়তায় আমরা তাদের জন্য এই জাহাজভর্তি সহায়তা পাঠিয়েছি। আশা করছি, রোজার আগেই সেগুলো তাদের কাছে পৌঁছে যাবে।

ফাতমা মেরিক ইলমাজ জানান, জাহাজটিতে এক লাখ ১০ হাজার খাবারের প্যাকেজ, ৬২০ টন ময়দা, ১৪ ট্রাক ভর্তি পানির বোতল এবং মোবাইল রান্নাঘর রয়েছে। মোবাইল রান্নাঘরগুলো পাঁচ হাজার মানুষের খাবার পরিবেশন করতে পারে।

তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত গাজাবাসী এমন দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকবে, তারা সহায়তা দিয়ে যাবেন। আর স্থায়ী যুদ্ধবিরতি অর্জিত হলে তারা ওই অবকাঠামোগত পুনর্গঠনে গাজাকে সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

এ পর্যন্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীদের জন্য সাতটি জাহাজে করে সহায়তা পাঠিয়েছে তুরস্ক। বৃহস্পতিবার পাঠানো জাহাজটি সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়। জাহাজটি মিশরের আল-আরিশ বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। জাহাজটি রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই গন্তব্যে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। পরে আরিশ বন্দর থেকে ট্রাকে করে এসব পণ্য গাজায় নিয়ে যাওয়া হবে। তুরস্ক কর্তৃপক্ষ সাতটি জাহাজের পাশাপাশি এ পর্যন্ত গাজাবাসীর জন্য ১২টি বিমানবোঝাই করেও ত্রাণ পাঠিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্মম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। টানা পাঁচ মাস ধরে চলা এ বর্বর হামলায় এরই মধ্যে ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৮০ হাজার ফিলিস্তিনি। এদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

এদিকে ইসরায়েল গাজায় হামলা চালানোর পাশাপাশি চারদিক থেকে গাজায় সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ফলে আগে থেকেই আন্তর্জাতিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল গাজাবাসী ব্যাপক খাদ্যসংকটে পড়েছে। অনেক দেন-দরবারের পর কিছু ত্রাণসামগ্রী গাজায় পৌঁছে দেওয়া গেলেও তার প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। ফলে খাদ্যসংকট ও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে গাজার লাখ লাখ মানুষ।