রমজানের আগে মামুনুল হক সহ আলেমদের মুক্তি না দিলে রমজানের পর কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো

               আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী

১১ মার্চ ’২৩ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর শায়খুল হাদীস আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী বলেছেন, আলেমদের যেভাবে জেলে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে এবং অসম্মানজনকভাবে কোর্টে উঠানো হচ্ছে। তা কোনোভাবেই বরদাশত করা যায় না।  দেশের মানুষের ধৈয্যের বাধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। আলেমদের জন্য মানুষ কাঁদে, মানুষের চোখের পানিতে আপনাদের মসনদ ধ্বংস হয়ে যাবে। সতরাং মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দী ও্রআলেমদের মুক্তি দিন। অন্যথায় রমজানের পর আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। তিনি আরও বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা ডাকাতি হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি ও দলবাজি চলছে। দুর্নীতিতে ছেয়েগেছে পুরো দেশ। এসব বন্ধ করুন। না হয় জনগণ আপনাদের ক্ষমতা নিয়ে টান দিবে।

তিনি আরও বলেন, কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করুন। কাদিয়ানীরা সমাবেশ করার সাহস কোথায় থেকে পায় তা দেশের মানুষ জানতে চায়। পঞ্চগড়ের ঘটনায় অনেক নিরীহ আলেম উলামাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের  হয়রানি ও গ্রেফতার করছে। অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার ও হয়রানি বন্ধ করুন এবং গ্রেফতারকৃতদের দ্রুত মুক্তি দিন। না হয় আলেম উলামা ও ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে বাধ্য হবে।  

তিনি বলেন, ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলাম বিরোধী পাঠ্যপুস্তক চলতে পারে না। বর্তমান পাঠ্যপুস্তক বাজেয়াপ্ত করে সংশোধিত নতুন পাঠ্যপুস্তক ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে দিতে হবে। অন্যথায় আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। 

তিনি আরও বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের দিকে কোনো দৃষ্টিপাত করছে না। মানুষ জীবন পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোনো সমন্বয় নেই। চাল, ডাল, তেলসহ সকল পণ্যের দাম আকাশচুম্বী যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। সামনে পবিত্র রমজান মাস। ব্যবসায়ীদের একটি গোষ্ঠী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। সিন্ডিকেটের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সনাক্ত করে কঠোর প্রদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 

তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঘোষিত ১০ দফা দাবী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ অনুষ্ঠিত জাতীয় উলামা সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা আব্দুল আজীজের যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ. জামিআ শায়েখ জাকারিয়া রিসার্চ সেন্টার এর মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, সংগঠনের অভিভাবক পরিষদের সদস্য ও জামিআ রাহমানিয়া আজীজিয়ার প্রধান মুফতি, মুফতি হিফজুর রহমান, সংগঠনের অভিভাবক পরিষদের সদস্য ও জামিআ্ মুহাম্মদিয়ার মুহতামিম আল্লামা আবুল কালাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মাওলানা আফজালুর রহমান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব এডভোকেট কাজী আবুল খায়ের, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা মোস্তফা তারেকুল হাসন,  ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, ফজলুল হক আমিনী রহ. এর জামাতা মাওলানা জসিম উদ্দীন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসিচব মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী, মাওলানা মাহবুবুল হক, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, কেন্দ্রীয় অফিস ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, মুফতি ওজায়ের আমীন, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মুমিন ও ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ খালেদ সাইফুল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মুফতি সাঈদ নূর, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক মাওলানা জি এম মেহেরুল্লাহ, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা নিয়ামতুল্লাহ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা মুহসিনুল হাসান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূইয়া, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাওলানা শরীফ হোসাইন, নির্বাহী সদস্য মাওলানা সাব্বির আহমদ উসমানী, মাওলানা জসিম উদ্দীন, মাওলানা রুহুল আমীন খান  প্রমুখ। 

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ বলেছেন, মামুনুল হক মুসলিম জাতীর অগ্রনায়ক। মামুনুল হককে জেলে রেখে ইসলামের আলো নিভানো যাবে না। বতিলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে। তাহলেই বাতিল ধ্বংস হবে।

মুফতি হিফজুর রহমান বলেছেন, বাতিলের বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামকে জেগে উঠতে হবে। জেল জুলুম আসবেই। তাতে ভয় করা যাবে না।

মাওলানা আবুল কালাম বলেছেন, হাফেজ্জী হুজুর রহ. ইসলাম বিরোধী সরকারকে বরদাসত করেনি। আমরা কারো চক্ষু রাঙ্গানোকে ভয় করি না। মামুনুল হক দেশ ও ইসলামের স্বার্থে কথা বলার কারণে কারাগারে বন্দি হতে হয়েছে। সুতরাং বতিলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা সময়ের দাবী।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করায় আপনারা যেভাবে ভ্রারাক্রান্ত তদ্রুপ আমরাও ভারাক্রান্ত। এব্যাপাারে কোনো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে পারছি না। সুতরাং সময়ের দাবী ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা।

মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের বলেছেন, ভারত বর্ষে আলেম উলামাদের উপর অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু আলেম উলামাদের সঠিক পথ থেকে সরাতে পারেনি। মামুনুল হককে বন্দি করেও আলেম উলামাদের ইসলামের পথ থেকে সরাতে পারবে না। সুতরাং মাওলানা মামুনুল হককে মুক্তি দিন।

ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা মোস্তফা তারেকুল হাসান বলেছেন, আপনাদের ১০ দফা দাবী বাস্তব ও সময়ের সাথে বাস্তবতা রয়েছে। ১০ দফা দাবী সরকার মানিবে না। সুতরাং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামতে হবে।

মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেছেন, সরকার আলেম উলামাদের সাথে যে আচরণ করেছে তা বৃটিশরাও করতে পারেনি। আমরা মাঠে নামলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদের হ্যানস্ত করতে চায়। সরকারের পাতানো পথে যাওয়া যাবে না। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা সময়ের দাবী।