বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পূর্ব নির্ধারিত ও চলমান সব পরীক্ষা স্থগিত করেছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। শনিবার (২০ এপ্রিল) বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল আমিন সিদ্দিক বলেছেন, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। কবে আবার সেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সেজন্য আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসব, আলোচনা করব, এরপর নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।
রোজার ঈদ ও পহেলা বৈশাখের টানা ১৩ দিনের ছুটি শেষে বুধবার বুয়েট ক্যাম্পাস খোলে। সেদিন দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হলেও ‘ছাত্র রাজনীতিমুক্ত’ ক্যাম্পাসের দাবিতে পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা।
সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ছিল, কিন্তু তারা তা বর্জন করেন। পরদিন বৃহস্পতিবার টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেন ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা৷ পরীক্ষা থাকায় এ দুদিন কোনো ব্যাচের ক্লাস ছিল না।
শনিবারও ২০তম ব্যাচের একটি পরীক্ষা ছিল, আন্দোলনের অংশ হিসেবে সেটিও তারা বর্জন করেছেন।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদকে রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েটে নিষিদ্ধ হয় ছাত্ররাজনীতি।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকেই বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি। যার পরিপ্রেক্ষিতে তার হলের সিট বাতিল করে বুয়েট প্রশাসন। পরে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে গেলে সিট ফেরত দিতে ও ছাত্ররাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের আদেশ দেন হাইকোর্ট। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে দৃশ্যমান আন্দোলন না করলেও পরীক্ষা বর্জন করে যাচ্ছেন।