জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিল সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। বিশেষ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষমতা সরকারের হাতে রাখতে রবিবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০২৩ নামে বিলটি উত্থাপিত হয়।
রবিবার (২২জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বর্তমান প্রক্রিয়ায় ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে গণশুনানি করে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ট্যারিফ সমন্বয় (মূল্য বৃদ্ধিতে) এবং প্রচলিত আইনে বর্ণিত প্রক্রিয়ায় মূল্য নির্ধারণে ন্যূনতম ৩ মাস সময় লাগে। তাই দ্রুততম সময়ে ট্যারিফ সমন্বয়ের (মূল্য বৃদ্ধির) লক্ষ্যে সরকারের ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব আনা হয়েছে। তবে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। কমিটিকে ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিলটি উত্থাপনের আগে আপত্তি জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, এই বিলটি আনা হলে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানীর দাম আরও বাড়বে। তার প্রতিক্রিয়ায় বাড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এতে জনদুর্ভোগ বাড়বে। কমবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ক্ষমতা ও মূল্য সমন্বয়ে জনগণের অধিকার।
জবাবে ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে দীর্ঘ সূত্রিতার তিক্ত অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মূল্য সমন্বয়ের যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়ন হয়েছে ২২ সালের অক্টোবরে। এরমধ্যে বিশ্ব বাজারে আরও মূল্য বৃদ্ধি ঘটলেও তা সমন্বয় করতে রাজি হয়নি কমিশন। এতে ভর্তুকি বেড়েছে। এভাবে ভর্তুকি দিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। পার্শ্ববর্তী কোনো দেশ গ্যাস, বিদ্যুতে ভর্তুকি দেয় না। তাই অর্থনীতির গতিকে চলমান রাখতে ও ভর্তুকি কমাতে দ্রুততম সময়ে ট্যারিফ সমন্বয়ের জন্য বিলটি আনা হয়েছে।
এরপর বিলটি উত্থাপনে জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমামের আপত্তি কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে প্রণীত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনটি এরমধ্যে তিনবার সংশোধন হয়েছে। প্রথম সংশোধনী গৃহীত হয় ২০০৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি, দ্বিতীয় সংশোধনী গৃহীত হয় ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এবং তৃতীয় সংশোধনী গৃহীত হয় ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর। বিলে বিদ্যমান আইনের ৩৪ ধারার (ক) উপ-ধারা (৩) এর সংশোধনী এনে বলা হয়েছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে, কমিশন কর্তৃক প্রবিধানমালা প্রণয়ন না করা পর্যন্ত, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।