জাতীর চিন্তা-চেতনা, আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয় সাহিত্যে বা রচনায়। কোনাে জাতির পরিচয় পেতে হলে সর্বপ্রথম জানতে হবে সেই জাতির সাহিত্যকে। কোনো জাতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করা যায় সাহিত্য পাঠ করে।
শুধু মাত্র কবির কবিতা বা সাহিত্যিকের রচনায় সাহিত্য প্রতিফলিত হয় না, বরং সাহিত্য হলো একটি জাতির সংস্কৃতির ধারক বাহক।বিশ্বের প্রতিটি জাতির সাহিত্যে সেই জাতির নিজ নিজ পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে ।
বাঙালি জাতি হিসেবে পৃথিবীতে আমাদের যে পরিচিতি, তার মূলেও রয়েছে আমাদের বাংলা সাহিত্য। স্বচ্ছ পানিতে তাকালে যেমনিভাবে ব্যক্তির চেহারা ভেসে উঠে, ঠিক সাহিত্যের মাধ্যমে ব্যক্তি চরিত্রের সৌন্দর্যতা ফুটে ওঠে। তাই জাতীয় জীবনে সাহিত্যচর্চা অতীব জরুরি। শুধু জাতীয় জীবনে নয় বরং সমাজ সংস্কার ও উন্নয়নে সাহিত্যের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সুতরাং সাহিত্যের প্রতি যত্নবান হওয়া আমাদের সকলের জন্য আবশ্যক।
সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, সাহিত্যের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পাওয়ার মন-মানসিকতা থেকে সরে আসতে হবে। কেননা জনপ্রিয়তা বা অন্যকে তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে সাহিত্য চর্চা করলে সেখানে মননশীলতা বা সৃষ্টিশীলতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আর মননশীলতা বা সৃষ্টিশীলতা হচ্ছে সাহিত্যের প্রাণস্বরূপ। যে প্রাণ অন্য প্রাণকে সজীব করতে সক্ষম। তাই সকল ধরনের বাহ্যিক প্রভাব, যা অভ্যন্তরীণ ক্রিয়া-কলাপের অন্তরায় হিসেবে কাজ করতে পারে;সেগুলি পরিত্যাগ করে সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করতে হবে। তাহলেই সত্যিকারার্থে ভালো ও উঁচু মানের সাহিত্যিক হওয়া সম্ভব। তবে কঠোর পরিশ্রম ও সাধনার পাশাপাশি আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা তো থাকতেই হবে।
সুতরাং এই দুর্দিনে নিজ অস্তিত্ব ও সত্তাকে ধরে রাখতে সাহিত্যের পাঠ এবং চর্চার বেশ প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।