
পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে জমিজমা সব বিক্রি করে চার বছর আগে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। দু’মাস আগে ছেলে বাড়িতে আসার কথা বলেছিল। সে সময় ছেলে জানতে চেয়েছিল, “মা তোমার জন্য কী আনবো?” তখন বললাম, তুমি যেদিন বাড়িতে আসবে, সেদিন তোমার সঙ্গে আমি ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে বাড়িতে আসতে চাই। আমার ছেলে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে। আমি খুবই খুশি। আরা কিছু চাই না।’
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মাউলি ইউনিয়নের কাঠাদুরো গ্রামের সৌদিপ্রবাসী ছেলে শরিফুল ইসলামের সঙ্গে হেলিকপ্টারে বাড়ি ফিরে এসব কথায় বলছিলেন মা আলেকা বেগম। গত সোমবার ঢাকা থেকে নড়াইল আসেন মা-ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কাঠাদুরো গ্রামের মৃত সাহেব উদ্দিনের স্ত্রী আলেকা বেগম জমিজমা বিক্রি করে একমাত্র ছেলে শরিফুলকে সৌদি আরব পাঠান। ছেলের আয়ে পরিবারে সচ্ছলতা ফেরে। চার বছর পর গত সোমবার সকালে শরিফুল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এর আগেই আলেকা বেগম পরিবারের ৩ জনকে নিয়ে বিমানবন্দরে হাজির হন।
এদিকে শরিফুল তার মাকে নিয়ে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে বাড়ি ফিরবেন এমন খবরে এলাকার হাজারো উৎসুক জনতা তাদের বাড়ির আঙিনায় ভিড় জমান। বেলা ১১টার দিকে হেলিকপ্টারে রওনা হলেও ভুল তথ্যের কারণে বাগেরহাটের ফকিরহাটের কাঠাদুরো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবতরণ করেন হেলিকপ্টারের পাইলট। পরে তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি আবার ঢাকায় ফেরত যায়। পরে সঠিক লোকেশন জেনে ওই দিন বিকেলে ফের মাকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন সৌদিপ্রবাসী ছেলে।
শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভুল ঠিকানার কারণে প্রথমে অন্য জায়গায় চলে যায় হেলিকপ্টার। পরে ঢাকায় ফেরার পর মাও বলেছিলেন হেলিকপ্টারে উঠেছি, এখন আমরা গাড়িতে চলে যাই। কিন্তু আর্থিক সচ্ছলতা তেমন না থাকলেও মায়ের ইচ্ছা পূরণে আবারও হেলিকপ্টারে বাড়িতে আসি।’