১ বছরে সাগরে মারা গেছে ৫৬৯ জন রোহিঙ্গা: ইউএনএইচসিআর

২০২৩ সালে সাগরে ৫৬৯ জন রোহিঙ্গার প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সাগরে রোহিঙ্গাদের প্রাণহানির সংখ্যা ২০১৪ সালের পর গতবছরই ছিল সর্বোচ্চ। মূলত মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় উন্নত জীবনের স্বপ্নে সাগরপথে ঝুঁকিপূর্ণযাত্রাকালে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

ইউএনএইচসিআর বলেছে, মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে এবং বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে উন্নত জীবনের আশায় পালাতে গিয়ে ২০২৩ সালে ৪ হাজার ৫০০ রোহিঙ্গা আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগর দিয়ে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেছে।

এক বিবৃতিতে ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র ম্যাথু সল্টমার্শ বলেছেন, ‘আনুমানিক হিসাব বলছে ২০২৩ সালে সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রতি ৮ জন রোহিঙ্গার মধ্যে ১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম প্রাণঘাতী সাগরপথ হয়ে উঠেছে আন্দামান ও বঙ্গোপসাগর।’

গত মঙ্গলবার জেনেভায় আয়োজিত সংবাদসম্মেলনে ম্যাথু আরও জানান, নিখোঁজ বা মৃত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ২০১৪ সালের পর থেকে ২০২৩ সালেই সর্বোচ্চ। ২০১৪ সালে ৭৩০ জন রোহিঙ্গা নিহত অথবা নিখোঁজ হন।

ইউএনএইচসিআর-এর বরাতে প্রকাশিত আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে মিয়ামারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গা নিধন শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। যারা মিয়ানমারে রয়ে যায় তাদেরও দেশটির জান্তা সরকার সেদেশের ক্যাম্পগুলোতে আটকে রেখেছে। তাই সুযোগ পেলেই উন্নত জীবনের আশায় মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার চেষ্টায় কাঠের নৌকায় চেপে বসছে রোহিঙ্গা, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও অনেক।

ইউএনএইচসিআর বলছে, ২০২৩ সালের নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে যখন সাগর মোটামুটি শান্ত ছিল তখন কাঠের নৌকায় করে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উত্তর কোণে নামে ১৫০০ রোহিঙ্গা। শুরুর দিকে মুসলিম আবেগ থাকায় ইন্দোনেশিয়রা রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি দেখালেও এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।

আল জাজিরা জানায়, ইন্দোনেশিয়া জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষর করলেও এখন তারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে অপারগতা দেখাচ্ছে। অন্যদিকে মালয়েশিয়া জাতিসংঘ কনভেনশনে স্বাক্ষর না করলেও বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ১০ লাখ ৮ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে।