‘আগামী নির্বাচন নয়, টোটাল রাজনীতিটাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ’

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেছেন, এখনকার তরুণরা আগের চাইতে অনেক বেশি সচেতন। আগে তরুণদের যেভাবে হ্যান্ডেল করা যেত, এখন আর সেভাবে করা যাবে না। কারণ নতুন এই জেনারেশন মোর ডেমোক্রেটিক। তাই কেবল আগামী নির্বাচন নয়, টোটাল রাজনীতিটাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

সাবেক এই এমপি এক গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

এত বড় একটা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘটে গেল দেশে। অনেকে একে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলছে। এই তুলনাকে আপনি কীভাবে দেখেন? এমন প্রশ্ন করলে জবাবে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, তুলনা করতেই পারেন। কিন্তু স্বাধীনতা জিনিসটার গুরুত্ব তো আলাদা। একটা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের জন্ম। তবে আমি কোনো অর্জনকেই ছোট করে দেখি না। স্বাধীনতার সময় ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন এবং সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণটা ছিল আলাদা বিষয়। তবে এবারও অনেক মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। আসলে এ আন্দোলনটা ছিল গত ১৫-১৬ বছরে মানুষের মনে পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহির্প্রকাশ। সরকার প্রচুর অহংকারী হয়ে গিয়েছিল। আমি মনে করি আল্লাহর তরফ থেকে এসেছে এই পতন।এই আন্দোলনে বিজেপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর অবদান কতটুকু? এমন প্রশ্নের জবাবে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, অবদান কতটুকু বলতে পারব না। তবে আমাদের ছাত্র সংগঠন তো সক্রিয়ভাবেই অংশগ্রহণ করেছে। আমাদের ছয়জন ছেলে এই আন্দোলনে মারা গেছেন। আমি নিজেও জেলে গিয়েছিলাম এই আন্দোলনের পক্ষে স্ট্যান্ড নেওয়ার জন্য। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো প্রথম থেকেই আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু এই আন্দোলনকে শুধু ১৫ দিনের আন্দোলন বললে ভুল হবে। ২০০ রানের ১৮০ রান আমরা করে দিয়েছি, আর এরা হয়তো ১০ বলে ২০ রান করেছে। এই ছাত্র-জনতা একটি ম্যাচিউরড আন্দোলনে লিড দিয়েছে। যার ফলে আন্দোলনের সফলতা এসেছে।
এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমকে কীভাবে দেখছেন এবং কোন কোন বিষয়ে সংস্কারের ওপর আপনারা অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে পার্থ বলেন, আমরা এটাকে পজিটিভলি দেখছি। আমরা সংবিধান সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। ওদিকে নির্বাচন কমিশনেরও কিছু কিছু ব্যাপার আছে। সেগুলোও দেখছি।

দেশের রাজনৈতিক অবস্থাটা আসলে কী এবং কেমন চলছে অর্থনীতি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমরা পজিটিভই মনে করি। কারণ একটা বিপ্লবের মাধ্যমে এই সরকার এসেছে। নৈতিকভাবে আমরা সবাই এই সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছি। সমর্থন করছি। প্রত্যেকটা সরকারের মতো একটু-আধটু ভুলত্রুটি তো হবেই। আর এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, এটি কোনো রাজনৈতিক সরকার নয়। এটি একটি অন্তর্বর্তী সরকার। যাকে আমরা সবাই সব জায়গা থেকেই সাপোর্ট করার চেষ্টা করছি। যাতে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি। কোনোভাবেই যেন এ সরকার ফেল না করে। অর্থনীতির কথা বলতে গেলে আমি বলব, অর্থনীতি একটু স্থবির। কারণ বড় বড় ব্যবসায়ী বা শিল্পপতি কিংবা ইনভেস্টর বলেন সবাই মনে করছেন যে, জনগণের সরকার অর্থাৎ নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ববোধ বা জবাবদিহিতা বেশি থাকে। হয়তো এই চিন্তা থেকেই ইনভেস্টমেন্টটা কম হচ্ছে। কিন্তু অন্ততপক্ষে ভালো দিকটা হলো- আমরা এখন ব্যাংক লুটপাটের কথা শুনছি না।

এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথা উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হয়, আগামী জাতীয় নির্বাচন বিএনপি এবং তার দলের জন্য কি চ্যালেঞ্জ?

গেছে- পার্লামেন্টারি সিস্টেম, নির্বাচনি ব্যবস্থা সবকিছুই নষ্ট করে দিয়েছে। এ অবস্থায় দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল হিসেবে সমস্ত দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী শক্তিকে লিড দিতে হলে বিএনপির নিজেকে নতুনভাবে সামনে নিয়ে আসতে হবে। সম্প্রতি আর একটি নতুন ম্যাসেজ আমাদেরকে বাংলাদেশ দিয়েছে। দেশে বর্তমানে চার থেকে পাঁচ কোটি তরুণ ভোটার আছে। এদের আগে যেভাবে হ্যান্ডেল করা যেত- এখন আর সেভাবে করা যাবে না। কারণ নতুন এই জেনারেশন মোর ডেমোক্রেটিক। কাজেই কাজেই শুধুমাত্র নির্বাচন নয়, রাজনীতিটাই আগামী দিনে আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা যদি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুসারে কাজ না করতে পারি, নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা অনুযায়ী রাজনীতি না করতে পারি এবং এদেরকে যদি সেভাবে হ্যান্ডেল করা না যায়- তাহলে হয়তো আমাদেরকেও একদিন ওরা আঁস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলে দেবে।

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে এবং এই কমিশনের কাছে প্রত্যাশা কতটুকু এমন প্রশ্নে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, একটা ভালো নির্বাচন করার জন্য তো শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, লোকাল গভর্নমেন্ট, পুলিশ, অন্যান্য অনেক মন্ত্রণালয় আছে- যাদের ইনভলবমেন্ট আছে কারণ নির্বাচন কমিশনের তো হাত-পা বাঁধা থাকে। কারণ তাদের তো প্রয়োজনীয় জনবল থাকে না। আমি মনে করি যে, এই নির্বাচন কমিশনকে আমাদের সবারই পজিটিভলি দেখা উচিত। সহযোগিতা করা উচিত। প্রায় ১৫-১৬ বছর পর সাধারণ মানুষ আবারও ভোট দেওয়ার স্বপ্ন দেখছে। এই অবস্থায় এই নির্বাচন কমিশনকে যদি আমরা সবাই মিলে সহযোগিতা করি তাহলে এই কমিশন ইনশাআল্লাহ একটা ভালো নির্বাচন করতে পারবে।

এরপর তাকে প্রশ্ন করা হয়, নির্বাচনি রোডম্যাপ না দিলেও সরকারের আইন উপদেষ্টা সম্প্রতি বলেছেন, আগামী বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কি? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ধারণা করছি, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার পরেই সরকার নির্বাচন দিতে পারে। তবে এই ভোটার তালিকার কী অবস্থা তা আমরা জানি না। তবে আগামী বছরের শেষের দিকে কিংবা ২০২৬-এর প্রথম দিকে একটা ভালো সময়ে নির্বাচন হতে পারে। এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের কথাও বলা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাও করা হয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তাবগুলো দিয়েও দিয়েছি। এই সংস্কার কার্যক্রমের একটা রোডম্যাপ সরকারের পক্ষ থেকে দিলে সেটি দেখে হয়তো আমরা বুঝতে পারব যে, নির্বাচনটা অ্যাকচুয়েলি কবে নাগাদ হতে পারে।

নির্বাচনের পর বিএনপি জাতীয় সরকার গঠনের কথা বলেছে। এতে আপনাদের সম্মতি আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি উল্লেখ করেন, ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে আওয়ামী লীগ আমাদেরকে যে অবস্থায় রেখে গিয়েছে, এই অবস্থায় একটা জাতীয় সরকার গঠন করাটা সময়ের দাবি। সবাই মিলে আমরা কীভাবে একটা ভালো দেশ গঠন করতে পারব, কিংবা দেশ গঠনের প্রক্রিয়াটা অন্তত শুরু করতে পারব সে উদ্দেশেই মূলত এই জাতীয় সরকার গঠনের কথাটি এসেছে। কাজেই আমার মনে হয় বিএনপির এই জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পজিটিভ একটা প্রস্তাব এবং এটা সবাই মেনেও নেবে।

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবি আসছে। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ কিংবা রাজনীতি করতে দেওয়া উচিত কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আমি নিজেই বিশ্বাস করি, কোনো রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের বিষয়টা আসলে কোনো কলমের খোঁচায় হয় না। এটা ঠিক করবে দেশের জনগণ। কিন্তু আওয়ামী লীগ কিংবা কোনো রাজনৈতিক দল যদি তার বেসিক ক্যারেক্টার হারিয়ে ফেলে, হত্যাকারী রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়, শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য। আমার মনে হয়, এখন একটা সময় এসেছে চিন্তা করার, আসলেই যদি কোনো একটা রাজনৈতিক দল তার রাজনৈতিক ক্যারেক্টার থেকে দূরে সরে যায়, জনগণের কথা না বলে যদি জনগণকেই হত্যা করার প্রক্রিয়ায় ঢুকে যায় এবং জাতীয়ভাবে কিংবা দলীয়ভাবে তারা যদি এটাকে এনডোরস করে- তখন শুধু আওয়ামী লীগ কেন- যে কোনো দলকেই রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করার একটা প্রভিশন সংবিধানে রাখা উচিত।

আওয়ামী লীগের বিচার করা উচিত কি না? সেটি কীভাবে হওয়া উচিত? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। আওয়ামী লীগ যদি দলীয়ভাবে এই হত্যাকাণ্ড কে এনডোরস করে থাকে তাহলে দলীয়ভাবে করা উচিত। আর যদি ক্ষমতায় থাকার জন্য ব্যক্তিগতভাবে করে থাকে, তাহলে ব্যক্তিগতভাবে বিচার করা উচিত। মোটকথা বিচারটা করা উচিত। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অন্যায় করার সাহস আর কেউ না পায়।বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি তিনি কীভাবে দেখেন এমন প্রশ্নের জবাবে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, খুবই পজিটিভলি দেখি। ছাত্রলীগ তো কোনো রাজনীতি করত না। হত্যা, ধর্ষণ, খুন, গুম, রাহাজানি, অর্থ পাচারসহ যাবতীয় অপরাধ তারা করেছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা উচিত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সব সময়ই স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে। আর যেহেতু এই সরকার কোনো রাজনৈতিক সরকার নয়, বরং এই সরকারও নতুন এবং নির্বাচন কমিশনও নতুন। সুতরাং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রক্রিয়াটা শুরু করলে অন্তত এটা বোঝা যেত যে, তারা কতটুকু কি করতে পারেন এবং কোন কোন জায়গায় তারা বাধার সম্মুখীন হন?

বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংশোধনের দাবি উঠেছে। এই পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো মুখ্য হওয়া উচিত?
এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধান পরিবর্তনটা আসলে জনগণের সরকারের করা উচিত। তারপরও এই সরকার যেহেতু একটি বিপ্লবী সরকার, কিছু পরিবর্তন যদি এই সরকার করে তাহলে আমরা এটাকে নৈতিকভাবে সমর্থন দিই। কিন্তু মেজর বিষয়গুলো যেমন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা। আর্টিক্যাল ২-এ মহানবী (সা.)-এর নাম অন্তর্ভুক্ত করা। এমপিদের কর্মপরিধি নির্ধারণ করে দেওয়া। তাছাড়া সাংবাদিক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক থেকে শুরু করে প্রবাসী, গার্মেন্টস কর্মী পর্যন্ত সর্বস্তরের পেশাজীবীদেরই একজন প্রতিনিধি থাকতে পারে। যারা তাদের নিজ নিজ পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবেন। মাদক সমস্যার নিরসন, এই বিষয়গুলো সংবিধানে থাকতে পারে।ইসলামিক রাজনৈতিক দল বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিয়ে আপনার মন্তব্য কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথম কথা হলো- জামায়াতে ইসলামী কোনো ইসলামিক রাজনৈতিক দল নয়। জামায়াতে ইসলামী হলো একটা রাজনৈতিক দল। তাদের রাজনীতি তারা করছে। তাদের গায়ে যে যুদ্ধাপরাধীর তকমা রয়েছে, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে তাদের স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা ছিল, এটা থাকবে। ‘জামায়াতের আমির বলেছেন, এটা যদি নিরঙ্কুশভাবে প্রমাণ হয় তাহলে তারা ’৭১ সালের ভূমিকার জন্য জাতির কাছে ক্ষমতা চাইবেন।’

তার এ বক্তব্যেই প্রমাণ হয় যে, তারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। সারা পৃথিবীর মানুষ জানে যে, জামায়াত স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। ’৭১-এ তাদের কী ভূমিকা ছিল, কিছু বিষয় আছে যে, প্রমাণ করতে হয় না। এগুলো মানুষের হৃদয়ে থাকে। মানুষ জানে কখন কার কী ভূমিকা ছিল। এখন জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনা যদি প্রমাণিত না হয়, তাহলে কি আওয়ামী লীগ দোষী না! এটা তো কোনো ইনডিভিজুয়াল চুরির ঘটনা নয় যে, প্রমাণিত হলো কি হলো না- তার ওপর নির্ভর করবে অপরাধের বিচার। সারা বাংলাদেশের মানুষ আকাশ-বাতাস পরিবেশ সবাই জানে যে, দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে কী হয়েছিল। আর এই আন্দোলনে আওয়ামী লীগের কী ভূমিকা ছিল। সবকিছু প্রমাণ দিয়ে হিসাব হয় না। পলিটিক্স পারসেপশনে চলে। প্রমাণে চলে না।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান, এমন কথা শোনা যাচ্ছে। আপনার অভিমত কী? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অবশ্যই, আমি এটাকে ওয়েলকাম জানাই। তারা যদি মনে করেন রাজনৈতিক দল গঠন করে জনগণের কথা বলতে চান, তারা যদি মনে করেন, সরকার নামানো আর সরকার চালানো এক জিনিস নয়। এই উপলব্ধি থেকে তারা যদি মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে নতুন নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান তাহলে এটাকে আমি সব সময়ই এপ্রিশিয়েট করব। এমনকি যদি আমাদের কাছে যদি অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে কোনো সহযোগিতা চায়, তাহলে সে ক্ষেত্রেও আমরা তাদের সহযোগিতা করব। যদি তারা জনগণের পক্ষে থাকেন।

আনুপাতিক হার পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন চায় জামায়াত, আপনারা একমত কি না? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত ইলেক্টেড পলিটিক্যাল গভর্নন্টেকেই করা উচিত। এটা একটা বড় সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কারণ এটার জন্য বিস্তর আলোচনা করতে হবে। সেটা পরেও করা যাবে। এই মুহূর্তে জনগণের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়াটাই বেটার।

কোনো কোনো স্থানে দেশের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, না এটা তো চরম হয়রানিমূলক কাজ। যদি পলিটিক্যালি কারও কোনো ইনভলবমেন্ট না থাকে তাহলে কোনোক্রমেই এ ধরনের হয়রানি করা উচিত নয়। কারও ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা বা কোনো স্বার্থে কারও বিরুদ্ধে কোনো রকমের মামলা দায়ের করা যাবে না। এটা আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনাকালেও বলেছি, যেন এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় মামলা দায়ের করা না হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আপনার মূল প্রত্যাশাটা কী?

জবাবে তিনি বলেন, আমাদের মূল প্রত্যাশা হচ্ছে- নির্বাচনমুখী সংস্কার করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। গণহত্যার বিচার করা এবং লুণ্ঠিত অর্থগুলো দেশে ফিরিয়ে আনতে না পারলেও অন্ততপক্ষে তার প্রক্রিয়াটা শুরু করা। যাতে করে পরবর্তী সরকার তা ফিরিয়ে আনতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সাড়ে তিন মাসের পারফরমেন্স কি সন্তুষ্টজনক? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সফলতা বা ব্যর্থতা পরিমাপের সময় এখনো আসেনি। সরকারের সময় যখন শেষ হবে তখন আমি তা মূল্যায়ন করব। তবে এটুকু বলব যে, এই সরকার শুরুটা করেছে। আমার সমর্থন দিচ্ছি। সহযোগিতা করছি। আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়তো পুরোটা করতে পারছেন না। তবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বাকিটাও শামাল দিয়ে ফেলবেন।

অন্তর্বর্তী সরকার ও জনগণের প্রতি আপনার আহ্বান কী? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের প্রতি আহ্বান হলো- আপনারা জনগণের পালস বোঝার চেষ্টা করেন। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করেন। বাজারটা নিয়ন্ত্রণে রাখেন যাতে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার ভিতরে থাকে। অন্যদিকে জনগণের প্রতি আহ্বান হলো- আপনারা আগামীতে ইমোশনাল বা কোনো রকমের আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। আবেগ থাকুক কিন্তু কাজ করতে হবে বিবেক দিয়ে। পছন্দমতো যোগ্য ব্যক্তিদের ভোট দিয়ে নিজের প্রতিনিধি নিয়োগ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *