গাজায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৪১ শতাংশ বেশি: ল্যানসেটের গবেষণা

ইসরায়েলের আক্রমণে গাজায় প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে ৪১ শতাংশ বেশি হতে পারে বলে একটি নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিশ্বখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনটিতে এ তথ্য উঠে এসেছে।

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা ‘ক্যাপচার-রিক্যাপচার’ পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করে গবেষণাটি চালান। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলায় গাজায় হৃতাহতের সংখ্যা তারা বিশ্লেষণ করেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ওই সময়ে ৩৭ হাজার ৮৭৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা ৫৫ হাজার ২৯৮ থেকে ৭৮ হাজার ৫২৫ জনের মধ্যে। গবেষকরা ৬৪ হাজার ২৬০ জনকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সংখ্যা বলে উল্লেখ করেছেন, যা সরকারি হিসাবের চেয়ে ৪১ শতাংশ বেশি।

গবেষণায় আরও জানানো হয়, নিহতদের ৫৯ শতাংশ নারী, শিশু এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী। ৬৪ হাজার ২৬০ জন নিহত হওয়ার অর্থ হচ্ছে, গাজার যুদ্ধপূর্ব মোট জনসংখ্যার প্রায় তিন শতাংশ মানুষ মারা গেছেন। অন্যভাবে বললে, প্রতি ৩৫ জন বাসিন্দার মধ্যে একজন ইসরায়েলি আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন। এই সংখ্যায় কেবল আঘাতে মৃতদের হিসাব করা হয়েছে; স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য সংকট বা ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়ে মৃত্যুবরণকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

‘দ্য ল্যানসেট’-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যুদ্ধের প্রথম দিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুধুমাত্র হাসপাতালে আনা মৃতদেহের ভিত্তিতে হিসাব করেছিল। ফলে হাসপাতালে আনা ছাড়াই দাফন করা মৃতদেহ হিসাবের বাইরে ছিল।

এদিকে, ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আল-আকসা, নাসের ও ইউরোপীয় হাসপাতালগুলো শিগগিরই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এর আগে কামাল আদওয়ান, ইন্দোনেশিয়ান ও আল-আওদা হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *