
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে বলে জাতিসংঘ অনুমান করেছে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, গাজায় সৃষ্ট ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষত মুছে ফেলার জন্য দীর্ঘ সময় ও বিপুল অর্থ ব্যয় হবে।
জাতিসংঘের এক মূল্যায়ন অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় সৃষ্ট ৫০ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারেই ২১ বছর সময় লাগতে পারে এবং এতে ব্যয় হবে প্রায় ১২০ কোটি ডলার। ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় ১০ হাজার নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যেতে পারে বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) এক কর্মকর্তা বলেন, এই যুদ্ধ গাজার উন্নয়ন ৬৯ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। গাজার বাড়িঘর পুনর্নির্মাণে অন্তত ২০৪০ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুনর্গঠন কার্যক্রম কয়েক দশক ব্যাপী চলতে পারে।
জাতিসংঘের স্যাটেলাইট তথ্য (ইউএনওস্যাট) অনুযায়ী, যুদ্ধে গাজার এক লাখ ৭০ হাজার ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা গাজা উপত্যকার মোট ভবনের ৬৯ শতাংশ। ধ্বংসস্তূপে পরিণত এসব ভবনে দুই লাখ ৪৫ হাজার ১২৩টি আবাসিক ইউনিট ছিল বলে ইউএনওস্যাট জানিয়েছে। বর্তমানে গাজায় ১৮ লাখের বেশি মানুষ জরুরি আশ্রয়ের প্রয়োজনে ভুগছে বলে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা জানিয়েছে।
গাজায় রাস্তার নেটওয়ার্কের ৬৮% ধ্বংস হয়ে গেছে এবং যুদ্ধের আগের মাত্র ২৫% পানির উৎস অবশিষ্ট রয়েছে। এ অবস্থায় গাজার পুনর্গঠন একটি দীর্ঘ ও কঠিন প্রক্রিয়া হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা ছাড়া এই বিশাল কাজ সম্পন্ন করা প্রায় অসম্ভব।