
আজ চার রোজা গেল, ইফতারের সময় শুধু পানি খাইছি। আবার শেষ রাতে ভাত খাই শুধু শাক আর কচু দিয়ে। সেহরিতে কোনও দিন পানিও খাইছি। মানুষের আলু কেটে দিয়ে যে কয়টা টাকা পাই তা দিয়ে চাল কিনব, তরকারি কিনব, কাপড় কিনব, না কী ওষুধ কিনব?’
ছলছল চোখে এসব কথা বলছিলেন চম্পা বেগম। তার বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌরসভার শ্রীকৃষ্টপুর মধ্যপাড়া গ্রামে। তিনি চিপসের জন্য আলু কেটে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু এ কাজ করে যে টাকা পান সেটা দিয়ে প্রতিদিনের প্রয়োজনটাই মেটাতে পারেন না।
জানা গেছে, চাম্পার স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি বাবার বাড়ি শ্রীকৃষ্টপুরে চলে আসেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। ছেলে পরিবার নিয়ে কোন রকমে সংসার চালান। মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া এক টুকরো জমিতে ঘর করে সেখানে থাকেন চম্পা।
কিভাবে তিনি সংসার চালান জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিধবা মানুষ। বারো বছরের বেশি হবে আমার স্বামী মারা গেছেন। মানুষের কাজ করে, আলু কেটে কোনো রকমে দিন চালাই। তিন বেলা ভাতও ঠিক মত খাইতে পারি না। কেউ বলে না কার্ড করে দিই, রিলিপ দিই। কেউ কিচ্ছু দেয় না।
তিনি আরও বলেন, আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে দোকানে কাজ করে খায়। তার বউও আছে। তারা নিজেরাই ঠিকমত খাইতে পায় না আমারে কি খাওয়াবে।
গ্রামের বাসিন্দা আবু রায়হান বলেন, চম্পার স্বামী মারা গেছেন ১২ বছর আগে। এরপর থেকে প্রচণ্ড কষ্ট করে দিন যাপন করছেন। মানুষের বাড়িতে কাজ করে, আলু কেটে কোনো রকমে সংসার চালান। তিনি সরকারি কোনো অনুদান পান না। এমনকি তাকে কোনো বিধবা ভাতার কার্ডও দেওয়া হয়নি।