জাতির অস্তিত্ব রক্ষার্থে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের বাঁচান

শিক্ষা একটি সেরা শক্তি। অনন্য অর্জন। এর সাথে শান্তি সভ্যতা শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা জড়িত। শিক্ষিত সমাজ জাতির স্তম্ভ। ইতিহাসের বহু বিপ্লব সাধিত হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে। সৃষ্টির সেরা মানবের জীবনে তাই মৌলিক প্রয়োজনের একটি হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে শিক্ষা। বরং শিক্ষার মতো অমূল্য নেয়ামত পেয়ে আমরা ধন্য হয়েছি।

কোন জাতিকে ধ্বংস করার জন্য প্রথমে তার শিক্ষা আর সংস্কৃতিতে আঘাত করা হয়। ঠিক যেমন বৃটিশরা আমাদের বিদ্যালয় বিরান করেছে। বোদ্ধাদের দ্বীপান্তর করেছে। সংস্কৃতিতে বিকৃতি ঘটিয়েছে।

আমরা ভাষার জন্য জীবন দিয়ে ইতিহাস গড়েছি। সে ভাষা এখন ইতিহাস থেকে হারিয়ে যাচ্ছে প্রায়। সিনেমা কার্টুনের মাধ্যমে সেস্থান দখল করে নিয়েছে নতুন এক মিশেল ভাষা। এখনের রাষ্ট্রীয় ও স্বায়ত্ব প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় সব কাজ চলে অবাংলায়। তাহলে জীবন দেওয়ার ফলাফলটা আমাদের রইলো কোথায়! উন্নয়ন উৎকর্ষের সময়ে অন্যদের স্বাতন্ত্র থাকলেও আমাদের শিক্ষা ভাষা সংস্কৃতি সবই আছে ভয়াবহ ঝুঁকিতে।

আগের ছাত্রদের প্রতি ছিলো জাতির আস্থা ও ভালোবাসা। কিন্তু এখন সন্তানরা বরং ঘরেই নিরাপদ। মা বাবার কাছে থাকলে তাদের নৈতিকতার হুঁশ থাকে। সমাজ ও সামাজিকতা বোঝে। পক্ষান্তরে বিদ্যালয়ে নেই আগের সেই শিক্ষক, সেই শিক্ষা। বন্ধুরা একত্র হলে কী কী করে তা নিয়ে অবিভাবকদের দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। বানোয়াট কাহানী আর উদ্ভট থিউরী দিয়ে পাঠ্য ভরে আছে। প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানেই হয় কতো দূষণ, অকর্ম, অনিয়ম, অসংযম। রঙ ঢঙে মাখামাখি, শব্দের ক্ষতিকর মাত্রায় ডিজে গান, মেয়েদের নৃত্য করিয়ে যুবাদের উসকে দেওয়া ইত্যাদি আরও কতো কী!

আজকের শিক্ষার্থীরা আগামীতে জাতির হাল ধরবে। এখন যা শেখাবো, সেটা প্রতিষ্ঠিত করবে। তাই অস্তিত্বের স্বার্থে আমাদের বিদ্যালয়গুলো আবাদ ও নিরাপদ করতে হবে। শিক্ষাক্রম পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ছাত্রদের মেধা মননের যত্ন নিতে হবে। জাতির জন্য তাদের গড়ে উঠার পথ করতে হবে। মোটকথা আমাদের পরিচয় টিকে থাকারা নির্ভর করে তাদের শিক্ষা, মনন আর সাংস্কৃতির ওপর…। সেজন্য শুধু সনদ নয়, আমাদের শিক্ষায় থাকুক শক্তি। যার সাথে শান্তি সভ্যতা শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা ইত্যাদি ভালো গুণাবলি অর্জিত হয়।

মুহাম্মদ এহছানুল হক সন্দ্বীপি

লেখক, গবেষক, তরুণ আলেম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *