![](https://poygam24.com/wp-content/uploads/2023/02/images-3-2.jpeg)
ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা ভোগ্যপণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছেন না। আমদানি করা পণ্যও খালাস করতে পারছেন না ডলারের অভাবে। তাই রমজানে ভোগ্যপণ্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।তারা বলছেন, রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্স সামান্য বেড়েছে। কিন্তু আমদানি কমায় উৎপাদন কমছে। ফলে রপ্তানি কমতে বাধ্য। আর বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় অনেক শিল্প উৎপাদন কমিয়ে দিতে বা বন্ধ রাখতে বাধ্য হবে। তবে আইএমএফ-এর ঋণ এলে ডলার সংকট কিছুটা কাটবে বলে মনে করেন তারা।
রমজান মাসে ছয়টি আমদানি পণ্যের বিশেষ চাহিদা থকে৷ সেগুলো হলো ভোজ্যতেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজ। বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি- এই দুই মাস এবং তারপর রোজার এক মাসের চাহিদা অনুযায়ী ওই ছয়টি পণ্য আমদানিতে ১৫৩ কোটি মার্কিন ডলারের প্রয়োজন হয়। আর শুধু রোজার এক মাসের চাহিদা পূরণে এসব পণ্য আমদানিতে প্রয়োজন ৫৬ কোটি মার্কিন ডলার।
আগামী মার্চের শেষ সপ্তাহে রোজা শুরু হচ্ছে। গত ডিসেম্বর থেকেই রমজানকেন্দ্রিক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির এলসি খোলা শুরু হয়। তবে ডলার সংকটের কারণে নিত্যপণ্য আমদানি বিল পরিশোধে দেরি হচ্ছে আর এলসি খোলায়ও জটিলতা দেখা দিয়েছে। অক্টোবর-ডিসেম্বরে এলসি খোলার হারও কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শেষ চার মাসে অপরিশোধিত চিনির এলসি আগের বছরের চেয়ে ২৮ শতাংশ কমেছে। এছাড়া অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ৪৭ শতাংশ, সয়াবিন ৮৩ শতাংশ, অপরিশোধিত পাম তেল ৯৯ শতাংশ, ছোলা ৪৭ শতাংশ ও খেজুর আমদানির এলসি খোলা কমেছে
৩০ শতাংশ।
আর যারা এলসি খুলে পণ্য বন্দর পর্যন্ত এনেছেন তারা ডলার না থাকার কারণে বিল পরিশোধ করতে পারছেন না, তাই পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না।
পরিস্থিতি সামলাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে বছরে যে ডলার ব্যয় হয় তার ১০ থেকে ২০ শতাংশ রমজানের পণ্য আমদানির চাহিদা পূরণে আলাদাভাবে রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছে। এখন সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে।
চট্টগ্রাম বন্দরে কয়েকজন আমদানিকারকের পণ্য আটকা পড়েছে বিল পরিশোধ না করতে পারার কারণে। তাদের পণ্য খালাস করা হচ্ছে না। এতে তাদের বাড়তি জাহাজ ভাড়া গুণতে হচ্ছে। আর বিল পরিশোধ পিছিয়ে দিলে জরিমানা গুণতে হবে।
এস আলম গ্রুপ এবং মেঘনা গ্রুপের পণ্য এখন বন্দরের জাহাজে রয়েছে। পাম তেল, চিনি ও সয়াবিন মিলিয়ে ৫৪ হাজার টন পণ্য বিল পরিশোধ না করতে পারায় তারা খালাস করতে পারছেন না। তাদের মোট ৩.৫১ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু ব্যাংকে ডলার মিলছে না। এই পণ্যের বাজার-মূল্য ৬৪১ কোটি টাকা। তাদের এখন জরিমানা গুণতে হচ্ছে। প্রতিদিন জাহাজ ভাড়া হিসেবে জরিমানা দিতে হচ্ছে মোট ৯৪ হাজার ডলার। এর আগে গত মাসে টিকে গ্রুপের আমদানি করা পণ্য খালাসে ডলার সংকটের কারণে ১০ দিন দেরি হয়। এতে তাদের ১০ দিনের বড়তি জাহাজ ভাড়া পরিশোধ করতে হয় বলে জানান টিকে গ্রুপের পরিচালক মোস্তফা হায়দার।
![ছবি: ইত্তেফাক](https://cdn.ittefaq.com/contents/cache/images/640x0x1/uploads/media/2023/01/13/3dca2e5bc649e4e75efd7e1ff8b27ebf-63c195a9225b5.jpg)