হযরত খাদীজার সাথে বিবাহ

ইবন ইসহাকের বর্ণনায় আছে, হযরত খাদীজা নবী (সা)-এর সফরকালীন সমুদয় অবস্থা, দরবেশের বক্তব্য, ফিরিশতাগণ কর্তৃক মাথায় ছায়াদানের ঘটনাবলী ওরাকা ইবন নওফল-এর নিকট গিয়ে খুলে বলেন। ওরাকা বললেন, খাদীজা ! যদি এ ঘটনাবলী সত্য হয় তবে অবশ্যই মুহাম্মদ এ উম্মতের নবী। আর আমি ভালভাবেই জানি যে, এ উম্মতের একজন নবীর আগমনের সময় আসন্ন। আমরা যাঁর অপেক্ষা করছি, তাঁর সময় অত্যন্ত সন্নিকটবর্তী এ কথা শুনে হযরত খাদীজার অন্তরে তাঁকে বিবাহ করার আগ্রহ জন্মায় । কাজেই সিরিয়া থেকে ফিরে আসার দু’মাস পঁচিশ দিন পর খাদীজা (রা) স্বয়ং তাঁর সাথে বিবাহের প্রস্তাব দেন। তিনি নিজ চাচার পরামর্শক্রমে এ প্রস্তাব কবূল করেন। নির্দিষ্ট দিনে তিনি নিজ চাচা আবূ তালিব, হামযা এবং বংশের অন্যান্য মুরুব্বীদের সাথে নিয়ে হযরত খাদীজার গৃহে আগমন করেন। মুবাররাদ থেকে বর্ণিত যে, হযরত খাদীজার পিতা তো হারবুল ফুজ্জারের পূর্বেই ইনতিকাল করেছিলেন। বিবাহের সময় খাদীজার চাচা আমর ইবন আসাদ উপস্থিত ছিলেন। 

আবূ তালিব বিবাহের খুতবা দেন। যার শেষাংশ ছিল নিম্নরূপ : “অতঃপর, মুহাম্মদ তো এমন এক ব্যক্তিত্ব, কুরায়শের মাঝে যে যুবক সম্ভ্রান্ত, উচ্চ মর্যাদা, গুণপনা ও জ্ঞানে সেরা, তার সাথে তাঁকে তুলনা করা হলে তাঁরই পাল্লা অধিক ভারী হবে। সম্পদ যদিও তাঁর কম, কিন্তু ধন-সম্পদ তো এক অস্তাচলমান ছায়ামাত্র এবং এমন বস্তু, যা প্রত্যর্পণ করা যায়। তিনি খাদীজা বিনতে খুয়ায়লিদের সাথে বিবাহ বন্ধনে ইচ্ছুক এবং খাদীজাও তাঁর সাথে বিবাহে আগ্রহী।

বিবাহের সময় তাঁর বয়স পঁচিশ এবং হযরত খাদীজার বয়স ছিল চল্লিশ বছর। বিশটি উট দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় (সীরাতে ইবন হিশাম) এবং হাফিয আবূ বিশর দুলাঈ বলেন, দেনমোহরের পরিমাণ ছিল সাড়ে বার উকিয়া; এক উকিয়ায় চল্লিশ দিরহাম হয়, কাজেই এ দেনমোহর ছিল পাঁচশত দিরহাম।’ এটা ছিল তাঁর প্রথম বিবাহ এবং হযরত খাদীজার তৃতীয় বিবাহ। 

সূত্র: সীরাতুল মুস্তফা সা.

সংকলনে: আহমাদ আল গাজী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *